কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সবার নজর কাড়ছে ৫০ মন ওজনের মানিক ও বাবু যুগল। ক্রেতারা শান্তপ্রকৃতির এ দুটি ষাঁড়ের এখন পর্যন্ত দাম হাকিয়েছে ১৪ লাখ টাকা। তবে মালিক অলি মিয়া ষাঁড় দুটির বিক্রয় মূল্য নিধারণ করেছেন ২২ লাখ টাকা।
প্রবাসফেরত অলি মিয়া ও তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বাড়ির আঙ্গিনায় একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। যেখানে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। সে সকল পশুর মধ্যে রয়েছে মানিক ও বাবু নামে দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়।
অত্যন্ত যত্নের সাথে ষাঁড় দুটির লালন পালন করছেন তারা। প্রতিদিন তাদের খাবারের তালিকায় দিচ্ছেন খৈল, ভূষি, বন, খড়, ঘাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার। তাদের পরিচর্যায় একজন লোকও রাখা হয়েছে। কালো দেহী মানিকের ওজন প্রায় ২৫ মণ। আগাগোড়া একেবারে থুলথুলে মাংসল। সাদা রংয়ের বাবুরও ওজন প্রায় ২৫ মণ। দেখতে অনেকটা গোলগাল।
আরও পড়ুন: অনলাইনে জমে উঠেছে কোরবানির পশু বেচাকেনা
অলি মিয়া জানান, গত চার বছর ধরে মানিক ও বাবুর লালন পালন করছেন। কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষে তাদের প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। এতে তাদের পিছনে প্রতিদিন এক হাজার টাকা খরচ করছেন। শুধু তাই নয়, তাদের খাবারের জন্য বাড়ির পাশে তিন কানি জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে ঘাসের আবাদ করেছেন।
তিনি জানান, পরিবারের সদস্যর মতই তাদের প্রতিপালন করা হচ্ছে। তবে খামারের পরিধি বাড়ানোর জন্য এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে শত কষ্টে সত্বেও পশু দুটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বলেন, গত চার বছর আগে খামারে থাকা একটি গাভী গরু থেকে এ দুটি ষাঁড়ের জন্ম। অনেক শখ করে তাদের নাম রাখা হয়েছে মানিক ও বাবু। তারপর থেকেই কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষ নিয়ে এ গুলোকে লালন পালন করা হচ্ছে। এবারের ঈদে মানিক ও বাবুকে বিক্রি করে দেয়া হবে। মনে শত কষ্ট থাকলেও তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাজার কেজির ‘বাংলার টাইগার’: দাম হাঁকছেন ৫ লাখ
গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.বি.এম সাইফুজ্জামান বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসছেন। তাদের কাছে যে পুঁজি আছে তা বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হচ্ছে পশু পালন। এতে স্বল্প পুঁজি দিয়ে গ্রামীণ পরিবেশে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ পশুপ্রাণী পালন করে তারা লাভবান হতে পারবেন। তবে যারা এ ধরনের উদ্যাগে নিবেন তারা যেন বিষয়টি আমাদের অবহিত করেন। প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সব্বোর্চ্চ সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, খামারি অলি মিয়া যে উদ্যোগ নিয়েছে আমি তাকে সাধুবাদ জানাই এবং যে কোন প্রয়োজনে আমরা তার পাশে থাকব।